Oct 21, 2020

প্রবালের রাজ্যে একদিন

by Mahee Anan Nur


অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশের সর্বদক্ষিনের জেলা কক্সবাজারের টেকনাফের অদূরে অবস্থিত নীল স্বচ্ছ জলের প্রবাল রাজ্য সেইন্ট মার্টিন। গত বছর ডিসেম্বরের শীতের ছুটিতে এক ফ্যামিলি ট্যুরের সুবাদে সেইন্ট মার্টিন যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। উল্লেখ্য সেটা ছিল আমার সেইন্ট মার্টিনে প্রথম ভ্রমণ, আমার বাবা, মা আর ছোটভাই এর আগে ঘুরে এসেছিল কিন্ত পরীক্ষার জন্য যাওয়া হয়নি আমার। তাই অন্যরকম এক ভালোলাগা কাজ করছিল।

আমাদের যাত্রার তারিখ ছিল ২০১৯ সালের ১৮ই ডিসেম্বর। ঢাকার মতিঝিল থেকে সেইন্ট মার্টিন হুন্দাই পরিবহনের বাসের শিডিউল ছিল ৭টায়, কিন্ত বাস দেরী করে ছাড়ে ৭:৩০টায়। আমি, আমার বাবা, মা, ছোটভাইয়ের সাথে সফরসঙ্গী ছিল মায়ের অফিসের দুইজন কলিগ ও তাদের পরিবার। পথমধ্যে রাত ১০টায় কুমিল্লার আইরিশ হোটেলে যাত্রাবিরতি করে আর এরপর ভোর প্রায় ৪টার দিকে চিটাগাং এর পথে ট্রাক উলটে যাওয়ার জন্য ৩০ মিনিট আটকা পড়তে হয়। ভোর ৭টায় টেকনাফ পৌছে নাস্তা করে সেইন্ট মার্টিনগামি সিন্দাবাদ ওয়াটার বাসে চেপে বসি আমরা। ওয়াটার বাসে সিগালদের সাথে করে চলতে চলতে দুপুর ১২টায় প্রবাল রাজ্য সেইন্ট মার্টিন পৌছাই।

নৌবাহিনীর রেস্ট হাউজে আমাদের আগে থেকেই বুকিং দেওয়া ছিল। রেস্ট হাউজে ব্যাগ রেখে, খাবার খেয়ে সেইন্ট মার্টিনের সৌন্দর্য দেখার জন্য বের হয়ে পড়ি আমরা। বিকেলে হুমায়ুন আহমেদ স্যারের বাসা ও আশেপাশের সি বিচগুলোতে ঘুরে সন্ধ্যায় হোটেলে ফিরে কোরালের বারবিকিউ করে খাই আমরা।

এরপর সবাই ঘুমিয়ে গেলেও আমি জেগে ছিলাম ভোরের সৌন্দর্য দেখার জন্য। ভোরের সৌন্দর্য উপভোগ করে সবার উঠার পর সকালে সবার সাথে ছবি তোলে ছেঁড়াদ্বীপের উদ্দেশ্যে ১৯ই ডিসেম্বর সকাল ৮টায় রওয়ানা করি আমরা আর প্রায় ৮:৩০টায় ছেঁড়াদ্বীপে পৌছাই। পানির প্রবল স্রোতের জন্য দ্বীপে না নামলেও নৌকায় বসে কিছু ছবি তুলে নিয়েছি। ছেঁড়াদ্বীপ থেকে ফিরে এসে সিবিচে গোসল করি আমরা।

সেদিন ছিল আমাদের সেইন্ট মার্টনে আমাদের শেষ দিন। মা ও বাবার চাকুরিজনিত ব্যস্ততার জন্য সফর সংক্ষিপ্ত করতে হয় আমাদের। ২০ তারিখ বিকাল ৩টায় সেইন্ট মার্টিন থেকে টেকনাফগামি ওয়াটার বাসে চড়ে সেইন্ট মার্টিনের অপার সৌন্দর্যকে পিছনে ফেলে আমরা চলে আসি টেকনাফ। টেকনাফ থেকে ৭টায় গাড়ি ছেড়ে যায় ২১ তারিখ ভোর ৫টায় আমরা ঢাকা পৌঁছাই।

আমার প্রথম সফর হিসেবে খুব সংক্ষিপ্ত হলেও অনেক সুন্দর একটা অভিজ্ঞতা ছিল আমার জন্য। পৃথিবী সুস্থ হলে আবারোও যাওয়ার ইচ্ছাপোষণ করি।

    43
    5